এমন দিনে তারে বলা যায়, এমন ঘন ঘোর বরিষায়।

“এমন দিনে তারে বলা যায়,
এমন ঘন ঘোর বরিষায়।”
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই লাইনগুলো বৃষ্টি ভেজা প্রেমের এক আবেশময় অনুভূতি তৈরি করে। এটি তাঁর গান "এমন দিনে তারে বলা যায়", যা প্রেমিকের মনের গভীর আবেগ প্রকাশ করে, বিশেষত বর্ষার আবহে।
গল্প: ‘বর্ষার সন্ধি’
১
সকাল থেকেই আকাশটা কালো হয়ে ছিল। মেঘগুলো যেন জমে উঠে অপেক্ষা করছিল ঠিক সময়ের জন্য। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই মুষলধারে বৃষ্টি নামল। শ্রাবণের এমন দিনে খোলা জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে, বৃষ্টির ফোঁটায় মিশে যেতে ইচ্ছে করে।
তানিয়া জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিল। আজ তার ভীষণ ইচ্ছে করছিল অনিরুদ্ধকে কিছু বলার। অনেকদিন ধরে জমে থাকা অনুভূতিগুলো আজ যেন মুখ ফোটার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। কিন্তু সাহস হয় না!
২
অনিরুদ্ধ তানিয়ার পুরনো বন্ধু। একসাথে পড়াশোনা, আড্ডা, হাসি-কান্না—সব মিলিয়ে একটা সুন্দর সম্পর্ক। কিন্তু তানিয়া জানে, তার অনুভূতি বন্ধুত্বের চেয়ে বেশি। সে বুঝতে পারে, অনিরুদ্ধের সামনে এলেই তার বুক কেঁপে ওঠে, গলা শুকিয়ে যায়।
আজকের এই বর্ষার দিনে মনে হলো, "এমন দিনে তারে বলা যায়..."
৩
দূর থেকে অনিরুদ্ধ ছাতা মাথায় আসছিল। তানিয়া ছাতা ছাড়াই বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল। সে হাত বাড়িয়ে দিলো বৃষ্টির দিকে, যেন জলকণার স্পর্শে ভয় কেটে যাবে।
অনিরুদ্ধ কাছে এসে বলল,
— “ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছো না কেন?”
তানিয়া মৃদু হেসে বলল,
— “আজ বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে করছে।”
অনিরুদ্ধ এক মুহূর্ত তাকিয়ে রইলো তার দিকে। যেন কিছু বুঝতে পারল। তারপর আস্তে করে বলল,
— “তাহলে বলো, আজ আমাকে কী বলতে চাও?”
তানিয়া ভেজা গলায় মৃদু স্বরে বলল,
— “তুমি কি জানো, এমন দিনে তারে বলা যায়?”
অনিরুদ্ধ একটু অবাক হলো, তারপর হাসল। আর সেই হাসির মধ্যে বৃষ্টির শব্দের চেয়েও মিষ্টি কিছু ছিল।
শেষ।
— এই গল্পটিতে রবীন্দ্রনাথের গানের অনুপ্রেরণায় প্রেমের একটি আবেগময় মুহূর্ত ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যেখানে বর্ষা শুধু প্রকৃতির নয়, হৃদয়েরও বৃষ্টিস্নান ঘটায়। 😊🌧️❤️